উপাচার্য নেই, আটকে রয়েছে একাধিক মেডিক্যাল কলেজের আসন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া।
রাজ্যের একাধিক মেডিকেল কলেজের স্নাতকোত্তর স্তরে আসন বৃদ্ধি আটকে রয়েছে বর্তমানে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন বৃদ্ধির জন্য সম্মতি দেবে কে? এটাই নাকি এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন! আর এই কারণেই একাধিক মেডিক্যাল কলেজে আসন বৃদ্ধি কার্যত স্থগিত রয়েছে।
স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় এর তরফ থেকে দাবী করা হয়েছে যে, কলেজে উপাচার্য নেই, তাই কোন কাজ হচ্ছে না। বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এমন অচল অবস্থা চললে ডাক্তারির পঠন-পাঠন লাটে উঠে যাবে। তবে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রশাসনের কর্মকর্তারা এবং সিনিয়র চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন যে, মেডিকেল কলেজে উপাচার্য না থাকলেও উপ-উপাচার্য বা রেজিস্ট্রার আসন বৃদ্ধির জন্য সম্মতি দিতে পারেন। তবে এই রাজ্যে সেটি হচ্ছে না।
MD, MS, DM, MCH ইত্যাদি কোর্সে আসন বৃদ্ধি করার আগে সংশ্লিষ্ট ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশনের(National Medical Commission) অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। তার আগে কলেজ কর্তৃপক্ষকে রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার কাছে আসন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় শংসাপত্রের জন্য আবেদন করতে হয়। এটি পাওয়া গেলে নির্দিষ্ট ফি সহ রাজ্যের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। তারপরেই পাওয়া যায় অ্যাফিলিয়েশন সার্টিফিকেট। এই সার্টিফিকেটসহ আবেদন পত্র জমা দিতে হয় ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশনে(NMC)। এরপরই ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশনের পক্ষ থেকে নতুন কোর্স চালু করা বা কোন কোর্সে আসন বৃদ্ধি করার অনুমোদন পাওয়া যায়।
বর্তমানে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ টি কোর্সের এফিলিয়েশন সার্টিফিকেট আটকে রয়েছে। আসন বাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা করেও নির্দিষ্ট অনুমোদনের অভাবে কার্যত সেই পরিকল্পনা স্থগিত রয়েছে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করছে যে কলেজে উপাচার্য নেই বলে সমস্যা হচ্ছে। গত মাসের 16 ই আগস্ট থেকে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে আবেদন চলবে আগামী 14 ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এমন টালবাহানা চলতে থাকলে আবেদন করার নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হয়ে যাবে। হাতে রয়েছে আর মাত্র কয়েকটা দিন। তবে সমাধান কি হবে, তার কোন উত্তর নেই কোন কর্তৃপক্ষের কাছে।
সম্প্রতি ইউজিসির নিয়ম মেনে নিয়োগ না হওয়ার কারণে রাজভবনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পাল কে সরিয়ে দেওয়া হয়। দেবাশীষ বসুকে উপ-উপাচার্য পদে নিয়োগ করে স্বাস্থ্য দপ্তর। তবে অপসারিত উপাচার্য তাকে দায়িত্ব স্থানান্তর করেননি। এজন্য তার কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। দিনের পর দিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এমন অচল অবস্থা চললে আগামী দিনে মেডিকেল পড়াশোনার ভবিষ্যৎ কি হবে, তাই নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।