রেগে গেলে মানুষ দড়াম করে দরজা বন্ধ করে কেন, আসল কারণ জানুন।
বলা হয় রেগে গেলে মানুষের মাথা ঠিক থাকেনা। আর রেগে গেলে মানুষ এমন অনেক কাজই করে থাকে যেগুলি সাধারণ অবস্থায় মানুষ সাধারণত করে না। রেগে গেলে আমরা সাধারণত কোন বস্তুর উপর বা কোন মানুষের উপর আমাদের রাগ দেখিয়ে থাকি। তবে মনোবিদদের মতে, রেগে গেলে আমাদের রাগ সব থেকে বেশি সহ্য করে যে, সে হলো আমাদের বাড়ির দরজা।
আমরা বেশিরভাগই রেগে গেলে দড়াম করে দরজা বন্ধ করে দিই। আর কিছুক্ষণ পর আমাদের রাগও আস্তে আস্তে কমে যেতে থাকে। তবে কখনো ভেবে দেখেছেন যে, রেগে গেলে আমরা দরজার উপরেই কেন আমাদের রাগ দেখাই? কেন সাধারণত অন্যান্য বস্তুর উপর আমাদের রাগ পড়ে না?
দরজার ওপর রাগ প্রকাশ করার এই বিষয়টিকে বিশেষজ্ঞরা নাম দিয়েছেন ডোরওয়ে এফেক্ট(Doorway Effect)। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, এটি আমাদের রাগের এমন একটি বহিঃপ্রকাশ যেটি সাধারণত রাগ কমাতে সাহায্য করে।
বিজ্ঞানীরা বলেন যে, আমরা যখন একটা জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দরজার মাধ্যমে প্রবেশ করি, তখন দরজা পার করার সাথে সাথে আমাদের মেমোরি কিছুটা ঝাপসা হয়ে যায় এবং তৎক্ষণাৎ কিছুক্ষণের জন্য আমাদের রাগের পরিমাণ কমে যায়। এই বিষয়টি খুব অল্প সময়ের মধ্যে ঘটলেও রাগ কমার জন্য এই সময়টুকুই যথেষ্ট।
২০০৬ সালে ডোরওয়ে এফেক্ট এর উপর একটি পরীক্ষায় ৩০০ জনের ব্যক্তির উপর একটি পরীক্ষা করা হয়। গবেষণায় দেখা যায় মানুষ যখনই দরজা পেরিয়ে এক ঘর থেকে অন্য ঘরে প্রবেশ করছে, তখন তাদের আগের স্মৃতি কিছুটা ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে রাগের পরিমাণও কমছে। অর্থাৎ স্থান পরিবর্তনের ফলে আমাদের অনুভূতির পরিবর্তন ঘটে। এই কারণেই বিষন্নতায় ভোগ রোগীদের ঘুরে বেড়ানোর পরামর্শ দেন ডাক্তাররা।
এছাড়াও বিজ্ঞানীরা বলেন যে দরজা দড়াম করে দেবার ফলে যে শব্দ তৈরি হয় সেই শব্দ আমাদের মনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এই শব্দ একটি অপরাধবোধ তৈরি করে যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমাদের দ্বারাও একটি ভুল হয়ে যেতে পারে। তবে দরজার ওপর রাগের বহিঃপ্রকাশ সাধারণত কিশোরদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়।