১০ই মার্চ ধর্মঘটে অংশ নেওয়া অনুপস্থিত কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার।
গত শুক্রবার, ১০ই মার্চ কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা এবং বকেয়া মহার্ঘ ভাতার (Dearness Allowence) দাবিতে রাজ্য সরকারের সরকারি কর্মচারীদের যৌথ মঞ্চের ডাকে সরকারি কর্মচারীদের ধর্মঘটে যে সমস্ত সরকারি কর্মচারীরা অংশ নিয়েছিলেন, এবার তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে ধর্মঘটের কোন প্রভাবই পড়েনি সরকারি দপ্তরের উপস্থিতির উপরে। নবান্নের রিপোর্ট অনুযায়ী এই দিন সরকারি দপ্তরে কর্মীদের হাজিরা ছিল প্রায় 90% এরও বেশি। কোন কোন সরকারি কর্মচারীরা DA আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, সেই দিকে কড়া নজর রেখেছিল সরকার।
এই দিন সরকারি কর্মচারীদের দুবার হাজিরা খাতায় সই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল নবান্নর তরফ থেকে। কর্মচারীদের অফিসে ঢোকা থেকে অফিস থেকে বেরোনো পর্যন্ত নজরদারি ছিল সরকারের।
রাজ্য সরকারের সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন অবশ্য দাবী করেছে যে নবান্নর প্রকাশিত ৯০ শতাংশ উপস্থিতির তালিকা ভুয়ো। রাজ্যের বহু সরকারি অফিসের কর্মচারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন ধর্মঘটে এবং ধর্মঘট সফল হয়েছে। এদিকে সমস্ত জেলাশাসকদের নবান্নর তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অনুপস্থিতি সংক্রান্ত রিপোর্ট পাঠানোর জন্য
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, ১০ই মার্চ ধর্মঘটের দিনে যে সমস্ত কর্মচারীরা অনুপস্থিত ছিলেন, তাদের একদিনের বেতন কাটা যাবে এবং কর্মজীবনে একদিনের ছেদ পড়বে। এছাড়া যারা ঐদিন অনুপস্থিত ছিলেন , তাদের শোকজ করা হবে এবং ঠিকমতো উত্তর না পেলে সুশৃঙ্খলামূলক কোন পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ধর্মঘটের দিন রাজ্যের কোন কোন দপ্তরে কর্মীদের উপস্থিতির হার কেমন ছিল।
- মুখ্যমন্ত্রীর দফতর: উপস্থিতির হার ১০০ শতাংশ।
- স্বরাষ্ট্র দফতর: উপস্থিতির হার ছিল ৯৫ শতাংশ।
- অর্থ দফতর: উপস্থিতির হার ৯০ শতাংশ।
- পর্যটন দফতর: উপস্থিতির হার ৯৬.৭৬ শতাংশ।
- কৃষি দফতর: উপস্থিতির হার ৯৪.২ শতাংশ।
- পঞ্চায়েত দফতর: উপস্থিতির হার ৯৩.৪ শতাংশ।
- স্বাস্থ্য দফতর: উপস্থিতির হার ৮২.২১ শতাংশ।
এছাড়া নবান্নর তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই দিন রাজ্যের স্কুলগুলিতে উপস্থিতি হার ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় ভালো। রাজ্যের প্রায় ৫০৩ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অধ্যাপক অধ্যাপিকাদের উপস্থিতির হার দুপুর ১টা পর্যন্ত ৯৬.৬৫ শতাংশ ছিল। তবে এখানেও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য সরকারের সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন এবং যৌথ মঞ্চ। তাদের বক্তব্য সরকারি কর্মচারীদের উপস্থিতি যদি এই দিন গড়ে ৯০% এর বেশি হয়, তাহলে ধর্মঘট মঞ্চে এত লোকের ভিড় কিভাবে হল? এছাড়া তাদের বক্তব্য রাজ্য সরকারের প্রকাশিত Attendence Sheet সম্পূর্ণটাই ভুয়ো এবং সরকারি কর্মচারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন।