WBP Constable Recruitment: এবার রুপান্তরকামীদের কনস্টেবল চাকরিতে সুযোগ। শূণ্যপদ সংরক্ষিত রাখা হবে।
এখন পশ্চিমবঙ্গে রূপান্তরকামী মানুষেরাও আইনশৃঙ্খলা সামলাবেন। তাঁদের এবার থেকে কনস্টেবলের পোশাকে দেখা যাবে (WBP Constable Recruitment)। এমনই সিদ্ধান্ত নিলেন রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। আজ রবীন্দ্র সদনে ট্রান্সজেনডারদের পরিচয় পত্র ও সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে এসে তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন।
রাজ্য সচিবালয় নবান্ন সূত্রের মতে, কর্মক্ষেত্রে সমান সুযোগের নীতিতে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে রূপান্তরকামী লোকদের চাকরি দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে নেওয়া ভালো যে, কর্ণাটক সহ কয়েকটি রাজ্য ইতিমধ্যে এই নিয়ম জারি হয়েছে অর্থাৎ রূপান্তরকামী মানুষদের জন্য সরকার আসন সংরক্ষিত করেছে। অন্য রাজ্যে এই নিয়ম জারি হলেও বাংলায় এই সুযোগ এতদিন ছিলো না তাই বাংলাতেও সরকারি চাকরিতে রূপান্তরকামী লোকদের সুযোগ দেওয়ার দাবি উঠেছে।
একটি সূত্র অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সরাসরি সংরক্ষণের মধ্য দিয়ে না গেলেও কর্মক্ষেত্রে সমান সুযোগের নীতিতে তৃতীয় লিঙ্গের লোকদের নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। নিয়োগ নিয়ে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই।
একজন প্রশাসনিক আধিকারিক বলেছেন, “এই পদক্ষেপটি কলকাতা পুলিশের সহযোগিতায় শুরু করা হচ্ছে। আগামী দিনে রাজ্য পুলিশ আইন সংশোধন করা হবে এবং সেখানেও এই নিয়োগ করা হবে।”
রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই মহিলা, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের সহযোগিতায় এই বিষয়ে নিয়ম তৈরি করেছে। এই প্রসঙ্গে বলা ভালো যে, কেন্দ্রীয় আইনের মূল শব্দগুলি হল ‘সকল ক্ষেত্রে সমান সুযোগ’, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি (অধিকার সুরক্ষা)’ বিধিগুলিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
কর্ণাটক সহ কিছু রাজ্য সরকার তাদের চাকরিতে তৃতীয় লিঙ্গের বা রূপান্তরকামী মানুষদের জন্য ১% পদ সংরক্ষিত করেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার বলছে, সমান সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারি চাকরিতে তাদের জন্য আলাদা কোনো সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। মহিলাদের ক্ষেত্রে যে সংরক্ষণ ছিলো এতদিন সেই সংরক্ষণের মধ্যেই তৃতীয় লিঙ্গের বা রূপান্তরকামী মানুষদের জন্যও নির্দিষ্ট স্থান রাখা হচ্ছে।
গত বছরই রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল এই নিয়ম জারি সম্পর্কে আর এবার তা চূড়ান্ত হলো। ২০১৯ এর কেন্দ্রীয় ট্রান্সজেন্ডার অধিকার সুরক্ষা আইন অনুযায়ী বিশেষ বিধি তৈরি করেছে রাজ্য।
রূপান্তরকামীদের ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে ভিন্ন। ঠিক হয়েছে উচ্চতা কিংবা অন্যান্য শারীরিক সক্ষমতার ক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে কম এবং মহিলাদের থেকে বেশি হবে রূপান্তরকামীদের জন্য। শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রেও ছাড় মিলবে রূপান্তরকামীদের জন্য। শিক্ষার ক্ষেত্রে ছাড় দেবার একটাই কারণ আর সেটি হলো যে এখনো অবধি অনেক রূপান্তরকামী ব্যক্তিই স্কুলে গিয়ে সঠিকভাবে পঠন পাঠন করতে পারেন না।
২০১৪ সালের দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের আইনে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের রূপান্তরকামী হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয় এবং তাঁদের লক্ষ্যই ছিল যে যাতে রূপান্তরকামী মানুষেরাও যাতে অন্যান্য সমস্ত মানুষদের মতোই সব বিষয়ে সমান অধিকার পায়। চাকরির ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ যে রাজ্য সরকারের প্রশংসার যোগ্য তা বলাই বাহুল্য।
এটিএইচবি-র সেক্রেটারি রঞ্জিতা সিনহা বলেন, “আমরা অনেকটা লড়াই করে আজ এই জায়গায় এসেছি। তবে যেভাবে আমাদের মধ্যে বেকারত্বের হার বাড়ছে, তাতে ১ শতাংশ সংরক্ষণ মেনে নেওয়া যায় না। তবুও বলব এটা আশাবাদী। তবে আমরা ভীষণভাবে খুশি, সেটা বলতে পারব না।”