হাওড়া স্টেশনে কেন ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম নেই জানেন কি? কারণটা জানলে অবাক হবেন।
রাজ্যের ব্যস্ততম স্টেশনগুলির মধ্যে একটি হলো ‘হাওড়া স্টেশন'(Howrah Station)! প্রতিদিনই বহু ট্রেন চলাচল করে এই স্টেশনটিতে। যাওয়া আসা করে দেশের ভিন্ন ভিন্ন প্রান্তের ট্রেন। ব্যস্ততায় ঘেরা এই জংশনের (Junction) বিষয়ে একটি কথা জানলে আপনি অবাক হবেন। কি সেই কথা আসুন জানা যাক।
অনেকগুলি প্ল্যাটফর্ম (Platform) নিয়ে তৈরি এই স্টেশনে দুটি কমপ্লেক্স(Complex)। ১ থেকে ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মগুলি রয়েছে ওল্ড কমপ্লেক্সে (Old Complex) এবং ১৭ থেকে ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম রয়েছে নিউ কমপ্লেক্সে(New Complex)। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। এই স্টেশনে ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মটিই নেই! কিন্তু এমনটা হবার কারণ কী? একটু আলোকপাত করি বিষয়টাতে আসুন।
১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম না থাকলেও, সেখানে রয়েছে একটি লাইন যা মূলত পণ্য পরিবহনের জন্যই তৈরি। এই লাইনটিকে “জিরো মাইল” (Zero Mile) হিসেবে অভিহিত করা হয়। সূত্র অনুযায়ী জানা যায় যে, ১৮৫৪ সালের ১৫ আগস্টে এই লাইনটি অর্থাৎ “জিরো মাইল” (Zero Mile) থেকেই বাংলার প্রথম ট্রেন পাড়ি দিয়েছিল হুগলির (Hooghly) উদ্দেশ্যে।
ট্রেনটি যাতায়াতের সময় কথা ছিল যে ট্রেনটি সকাল সকাল সাড়ে আটটার দিকে হাওড়া থেকে হুগলী স্টেশনের (Howrah to Hooghly Station) দিকে শুরু করবে নিজের যাত্রা এবং দুপুর একটা নাগাদ আবার ট্রেনটি ফিরে আসবে হাওড়া স্টেশনে। কিন্তু ভাবনা এমন হলেও, যাত্রাপথে ট্রেনটি দুই ঘণ্টা লেট করে ফেলে।
এখানেই শেষ নয়! ট্রেনটি যখন তার যাত্রাপথে রওনা দিয়েছিল, ঠিক সেই সময় আশেপাশের এলাকায় থাকা মানুষ ভীষণ রকম অবাক হয়ে ওঠে একটি স্টিম ইঞ্জিনকে (Steam Engine) এভাবে মাঠঘাট পেরিয়ে ধোঁয়া নির্গত করে এগোনো দেখে! অনেকেই ট্রেনটিকে ‘আগুনের রথ’ নামে ডাকা শুরু করেন। কেউ কেউ আবার তাঁদের এই অদ্ভুত ‘রথ’ এ চেপে যাত্রা করেন। একজন বাঙালি ভদ্রলোক তো এটাও দাবি করে বসেন যে,”এই রথ ছ’দিনের পথকে মাত্র ৬ ঘন্টায় অতিক্রম করে ফেলতে পারে তাতে চলাচল করলে নিশ্চিতরূপে মানুষের আয়ু কমে যেতে পারে!”
কি অদ্ভুত ভাবনা ও ঘটনা তাইনা! বর্তমান সময়ে ট্রেন পরিবহন ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠলেও এই প্ল্যাটফর্ম থেকে আর ট্রেন চালু করতে দেখা যায়না।
-Written by Riya Ghosh