WB TET Exam: টেট পরীক্ষার উত্তরপত্র যাচাইয়ের সুযোগ পরীক্ষার্থীদের, ঘোষণা পর্ষদের।
গত বছরের অর্থাৎ ২০২২ সালের ১১ই ডিসেম্বর প্রচুর নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা রেখে হয়েছিল টেট পরীক্ষা (WB TET Exam)। প্রায় ৭লক্ষ পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষা দেন চাকরির আশায়। গত ১০ই ফেব্রুয়ারি বেরিয়েছে টেট পরীক্ষার ফলাফল আর এতে উত্তীর্ণও হয়েছেন অনেকে কিন্তু তাও এই ফলাফল নিয়ে অস্বচ্ছতার কথা উঠছে।
এই অভিযোগ দূর করতে পর্ষদ এবার এক বড় ঘোষণা করলো। গত মঙ্গলবার এই বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পর্ষদ। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরি পেতে যাঁরা ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর ‘টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট’ (টেট)-এ অংশগ্রহণ করেছিলেন, সেইসব পরীক্ষার্থীরা চাইলেই নিজেদের উত্তরপত্র যাচাই করার সুযোগ পাবেন। কিভাবে এই বিষয়ে আবেদন করা হবে তাও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
পর্ষদের মাধ্যমে একটি পোর্টাল থেকে এই ঘোষণা করা হয়েছে আবেদনের জন্য। তবে এই পোর্টাল ছাড়াও একটি ওয়েবসাইটের উল্লেখ আছে যেখানে এই বিষয়ে আবেদন করা যাবে। আগামী ৩রা মার্চ থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। চলবে ১০ই মার্চ পর্যন্ত। ৩রা মার্চ বিকেল ৫টা থেকে ১০ই মার্চ রাত ১১:৫৯ অবধি করা যাবে এই বিষয়ে আবেদন। আবেদন করার জন্য পরীক্ষার্থীকে ১০০০টাকা দিতে হবে এবং প্রক্রিয়াটি হবে অনলাইনে।
পর্ষদের এক আধিকারিকের কথায়, “রাজ্য সরকার নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি রুখতে বদ্ধপরিকর। তাই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যাতে কোনও প্রশ্ন না ওঠে, তাই আগে থেকেই এই ধরনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছ ভাবে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ সম্ভব বলেই পর্ষদ মনে করছে।”
বর্তমান সময়ে এমনিতেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে চলছে দুর্নীতির বিতর্ক। তা নিয়ে এমনিতেই জর্জরিত পর্ষদ ও রাজ্য সরকার। সেই ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি চাইছে না কেউ তাই এই নয়া ব্যবস্থা, এমনটাই মনে করছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ডলীর একাংশ। প্রাথমিকের টেট পরীক্ষার ইতিহাসে এই ঘটনা প্রথম এবং একটি দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা।
তবে এই বিজ্ঞপ্তি নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে বামপন্থীদের তরফ থেকে। বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, “সরকার যদি সত্যি নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে চাইত, তাহলে ইন্টারভিউতে ১০ নম্বর রাখত না। আসল দুর্নীতি তো এখন ওখানেই হওয়ার সুযোগ আছে।”
এই বিষয়ে তৃণমূল শিক্ষক সমিতির সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন যে,”কোনও প্রার্থীর মনে যদি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কোনও সংশয় তৈরি, তা হলে এই পদ্ধতিতে সহজেই যাচাই করে নেওয়া যাবে। যাঁরা ইন্টারভিউ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে তাঁদের বামফ্রন্ট জমানায় টেট ছিল না। জেলা প্রাথমিক সংসদ থেকে পরীক্ষা নেওয়া হত। তখনও ইন্টারভিউতে ১০ নম্বর করেই থাকত। আর ফলাফল প্রকাশের পর দেখতে পেতাম বহু স্বনামধন্য সিপিএমের ক্যাডাররা প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পেয়েছেন।”
তর্ক বিতর্ক তো চলতেই থাকবে তবে আপাতত পর্ষদের তরফ থেকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য সত্যিই অনেকে উপকৃত হতে চলেছেন।
-Wriiten by Riya Ghosh