অন্যান্য

PAN-Aadhaar Link: আর মাত্র ৪০ দিনের মেয়াদ! তারপর? বিপদে পরার আগে সাবধান হোন।

হেডলাইন দেখে ঘাবড়ে গেছেন তো? ভাবছেন যে কোন বিপদের কথা বললাম, তাইতো? আমি আধার কার্ডের সাথে আপনার প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhaar Link) করানোর কথা বলছি। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। হাতে আর মাত্র ৪৫ দিন সময় আগে এই ছোট্ট কিন্তু ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সম্পন্ন করার। এখনো যদি আপনি নিজের আধার কার্ড ও প্যান কার্ডের লিঙ্ক না করিয়ে থাকেন তাহলে খুব তাড়াতাড়ি করে ফেলুন।

সরকার আমাদের প্রচুর সময় দিয়েছে প্রথম থেকে। প্রথমে বলা হয়েছিল প্যান এবং আধার কার্ড লিঙ্ক করানোর সময়সীমা ৩১শে মার্চ, ২০২২ সাল। আয়কর বিভাগের (Income Tax Department) একটি বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণাটি করা হয়েছিলো। কিন্তু বহু মানুষ সেই সময়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন না করতে পারার জন্য সেই সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০শে জুন, ২০২২ তারিখ করা হয়েছিল।

তবে হ্যাঁ যেসব গ্রাহকরা গত বছরের ১লা এপ্রিল থেকে ৩০শে জুনের মধ্যে এই লিঙ্কিং করিয়েছিলেন, তাঁদের জরিমানা স্বরূপ দিতে হয়েছিল ৫০০ টাকা। এই সময়সীমার মধ্যেও অনেকেরই আধার ও প্যান কার্ড লিঙ্ক করার কাজটি সম্পন্ন না হওয়ায় আয়কর বিভাগ এই সময়সীমা আরও বাড়িয়ে ৩১ মার্চ, ২০২৩ করে দেয়।

তবে এর সঙ্গে একটি নতুন নিয়মও জারি করা হয়েছিল যে, ১লা জুলাই, ২০২২ তারিখ থেকে ৩১শে মার্চ, ২০২৩ তারিখের মধ্যে প্যান-আধার লিঙ্ক (Pan-Aadhaar Link) করানোর ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। তবে বলা হয়েছিলো যে এই সময়সীমার মধ্যে প্যান এবং আধার লিঙ্ক না করালে প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় (Expire) হয়ে যেতে পারে।

আবারও সুযোগ! হ্যাঁ এরপর আবারও সময়ের মেয়াদ বাড়ানো হয় এবং সেই মেয়াদও বেড়ে এবার এসে দাঁড়িয়েছে ৩০শে জুন, ২০২৩ এ অর্থাৎ হাতে রয়েছে আর মাত্র ৪৫ দিন! এখনো ভাবছেন? আর দয়া করে দেরি করবেন না। দ্রুত সেরে ফেলুন এই জরুরি কাজটি।

এখনও অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকতে পারে যে প্যান-আধার লিঙ্ক করাটা এত জরুরি কেন? তাহলে আসুন সবিস্তারে বলা যাক:

প্রথমেই জেনে রাখুন যে যদি আপনার প্যান কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড লিঙ্ক না থাকে তবে আপনার প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। এবার আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে প্যান কার্ডের প্রয়োজনীয়তা কী? আসুন জানা যাক:

i) ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন (Income Tax Return) বা আইটিআর ফাইলিংয়ের ক্ষেত্রে প্যান-আধার লিঙ্কিং বাধ্যতামূলক। যদি সেটি না হয় তবে আয়কর বিভাগ থেকে আপনার আইটিআর নাকচ করে দেবে।

ii) দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা সকলেই সরকারি পরিষেবা লাভ করে থাকি কিন্তু এই কাজটি না করলে সেই পরিষেবা পাওয়া থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন।

iii) বাইরের দেশে যেতে গেলে পাসপোর্ট (Passport) লাগে কিন্তু প্যান-আধার লিঙ্ক না করালে আপনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন না।

iv) কেন্দ্রীয় সরকার গ্যাসের জন্য ভর্তুকিযুক্ত গ্যাস দিয়ে থাকে কিন্তু এই লিঙ্ক না করালে আপনি আর ভর্তুকি লাভ করতে পারবেন না।

v) বর্তমানে প্রায় সকলেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (Bank Account) ব্যবহার করেন। কারো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকলে তিনি যখন নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে যাবেন তখন সেই কাজটি সম্পন্ন করা যাবেনা শুধুমাত্র প্যান এবং আধার লিঙ্ক নেই বলে।

সর্বোপরি বলা যায় যে প্যান-আধার লিঙ্ক না করালে কোনোরকম সরকারি পরিষেবাই আর পাবেন না আপনি।

আচ্ছা আপনার প্যান কার্ড কি খুব পুরোনো হয়ে গেছে বা হারিয়ে গেছে বা চুরি গেছে? নতুন প্যান কার্ড বানাতে চান? পারবেন না সেটিও যদি আপনার প্যান কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড লিঙ্ক করানো না থাকে। নতুন অর্থাৎ Duplicate প্যান কার্ড বানানোর আবেদন করতে গেলেও প্যান-আধার লিঙ্ক জরুরি।

আচ্ছা ধরুন যে এরপরেও কোনো কোনো গ্রাহক প্যান-আধার লিঙ্ক করাতে পারেন নি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে। তখন কি হবে? যথারীতি আপনার প্যান কার্ডটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। তার ফলে কি কি সমস্যা হতে পারে আপনার? আসুন দেখি:

i) সরকারকে কর আমরা সকলেই দিয়ে থাকি তাই তো? কিন্তু এই নিষ্ক্রিয় প্যান কার্ড দিয়ে আইটিআর ফাইল করতে পারবেন না করদাতারা। না বাকি থাকা রিটার্নস(Returns) কার্যকরী হবে, না বাকি থাকা রিফান্ডও (Refund) মিলবে।

এর ফলে কী সমস্যা হবে? এর ফলে উচ্চ হারে TCS/TDS প্রযোজ্য হবে। ফর্ম 26AS-এ টিসিএস/টিডিএস, কোনো ক্রেডিটই আসবে না এবং টিসিএস/টিডিএস সার্টিফিকেটও মিলবে না। TDS না থাকলে করদাতারা 15G/15H Declaration জমা করতে পারবেন না।

ii) প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে ব্যাঙ্কে আর নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন না গ্রাহকেরা এবং ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড (Debit/Credit Card) মিলবে না।

iii) ৫০০০০ টাকার বেশি Mutual Fund Unit কেনা সম্ভব হবে না। এক দিনে ৫০০০০ এর বেশি সংখ্যার অর্থ ব্যাঙ্ক অথবা পোস্ট অফিসে নগদ জমা করতে পারবেন না গ্রাহকেরা। এক দিনে ৫০০০০ টাকার বেশি ক্যাশ ব্যাঙ্ক ড্রাফট অথবা পে-অর্ডার কিনতে পারবেন না।

iv) ব্যাঙ্ক, নিধি, নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কর্পোরেশন (এনবিএফসি) ইত্যাদিতে টাইম ডিপোজিট (Time Deposit) যদি ৫০০০০ হাজার টাকার বেশি হয় অথবা একটি আর্থিক বছরে মোট জমার পরিমাণ ২৫০০০০ টাকার বেশি হয়, তা-হলে সেটা আর ব্যবহার করা যাবে না।

RBI দ্বারা সংজ্ঞায়িত ব্যাঙ্ক ড্রাফটের (Bank Draft) মাধ্যমে একটি পেমেন্ট অথবা তার বেশি প্রিপেড পেমেন্ট ইনস্ট্রুমেন্টের (Prepaid Payment Instrument) ক্ষেত্রে একটি আর্থিক বর্ষে পে অর্ডার অথবা ব্যাঙ্কারের চেকের সমষ্টি ৫০০০০ টাকার উর্ধ্বে হওয়া যাবে না। পণ্য এবং পরিষেবা ক্রয়-বিক্রয়কারী কোনও ব্যক্তি ২ লক্ষ টাকার উর্ধ্বে লেনদেন করতে পারবেন না।

এতকিছু কারণ এবং সমস্যার কথা বিস্তারে বললাম। এরপরে নিশ্চয় আর দেরি করবেন না! তাড়াতাড়ি এবার নিজের প্যান কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড লিঙ্ক করানোর এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সেরে ফেলুন।

-Written by Riya Ghosh

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker