উঠে যাবে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক, সেমিস্টার ভিত্তিক শিক্ষার পথে এগোচ্ছে রাজ্য।
উচ্চশিক্ষার সিস্টেমের মতো এবার থেকে স্কুল স্তরেও সেমিস্টার(Semester) চালুর চিন্তাভাবনা করছে রাজ্য সরকার। বাংলার নতুন শিক্ষানীতি(New Education Policy WB) আনার পথে নবান্ন। করোনা চলাকালীন উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে অর্থাৎ একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে সেমিস্টার চালু করার কথা বলেছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তবে তখন বিষয়টি নিয়ে কোন সিদ্ধান্তে উপনীত না হলেও বর্তমানে স্কুল স্তর থেকেই সেমিস্টার চালু করার পথে নবান্ন।
রাজ্য সরকার কেন্দ্র সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতি সম্পূর্ণটা মানতে আগ্রহী নয়। গ্রাজুয়েশন এর ক্ষেত্রে যা পরিবর্তন আনা হয়েছে, তা ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন ব্রাত্য বসু(Bratya Basu)। বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন যে, রাজ্য কেন্দ্র সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতিকে মেনে নেয়নি। বরঞ্চ পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনেকে আবার বলছেন চার বছরের স্নাতক কোর্স চালু করা আর কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতিকে (NEP 2020) মেনে নেওয়া, দুটি একই বিষয়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে রাজ্য নতুন শিক্ষানীতির খসড়া তৈরি করেছে। নতুন প্রস্তাবিত খসড়াতে বলা হয়েছে অষ্টম শ্রেণী থেকেই সেমিস্টার চালু করা হবে। কমিটির প্রস্তাবে সায় দিয়েছে রাজ্য।
গত সোমবার মন্ত্রিসভার একটি বৈঠকে রাজ্যের নতুন শিক্ষানীতির পলিসি ওঠে। সেখানে শিক্ষানীতির কাঠামোর আমূল পরিবর্তনের নীতি স্থির করা হয়েছে। আগামী তিন বছর ধাপে ধাপে স্কুল স্তরে সেমিস্টার ভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি শুরু করা হবে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও বড়সড় বদল আনতে চলেছে রাজ্য। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতে MCQ ধরনের প্রশ্নের অন্তর্ভুক্তিকরনের কথা ভাবছে রাজ্য।
স্কুল স্তরে এবার বার্ষিক পরীক্ষার বদলে বছরে দুটি করে পরীক্ষা হবে সেমিস্টার ভিত্তিক। কলেজ সেমিস্টারে যেমন ৬ মাস অন্তর দুটি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়, স্কুলের ক্ষেত্রেও অনেকটা তেমন হবে। এই পদ্ধতি কার্যকর হলে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ডের অস্তিত্ব থাকবে কিনা, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।
বার্ষিক সেমিস্টার ভিত্তিতে পরীক্ষা নেওয়া হলে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার কোন অস্তিত্ব থাকবে না। ফলত মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা একপ্রকার উঠে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।